বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫ - ২২:৩১
শত্রুর চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে, ইরানি জাতি কখনো দুর্বল পক্ষ নয়

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইরানি জাতির সাহসিকতা, ঐক্য ও আত্মত্যাগ এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করেছে। তিনি বলেন, এই লড়াই ছিল আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক, যা শত্রুদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: বুধবার সকালে বিচার বিভাগের প্রধান ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, “এই যুদ্ধ প্রমাণ করেছে, ইরানি জাতি যুক্তরাষ্ট্র ও তার অনুগত কুকুর ইসরায়েলের মতো শক্তিধরদের মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত। এ মানসিকতা অমূল্য।”

তিনি বলেন, শত্রুরা ভেবেছিল ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালিয়ে জনগণকে উত্তেজিত করে রাস্তায় নামানো যাবে এবং এভাবে ইসলামি ব্যবস্থা ধ্বংস করা সম্ভব হবে। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটি ঘটেছে। “আল্লাহ তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছেন, আর জনগণ ইসলামি শাসনব্যবস্থার পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে।”

দুর্বলতার কোনো স্থান নেই
সর্বোচ্চ নেতা জোর দিয়ে বলেন, “ইরানি জাতি কখনো কোনো লড়াইয়ে দুর্বল অবস্থানে প্রবেশ করে না। আমরা যুক্তির শক্তি ও সামরিক সক্ষমতা—দুটোই সঙ্গে নিয়ে কূটনৈতিক হোক বা সামরিক, প্রতিটি ময়দানে প্রবেশ করি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যুদ্ধকে স্বাগত জানাইনি, কিন্তু যখন শত্রু আগ্রাসন চালিয়েছে, আমরা শক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।”

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী জানান, আমেরিকার কাতারে অবস্থিত যে ঘাঁটিতে ইরান পাল্টা হামলা চালিয়েছে, তা ছিল এই অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল কেন্দ্র।

“যখন এই হামলার সেন্সরশিপ তুলে নেওয়া হবে, তখন সবাই বুঝতে পারবে যে আমাদের প্রতিক্রিয়া কতটা ভয়াবহ ছিল। এবং আমরা চাইলে আরও বড় আঘাত হানতে পারি,”—বলেন তিনি।

ইহুদিবাদ ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, “আমরা ইসরায়েলকে একটি ক্যান্সার হিসেবে দেখি এবং আমেরিকা যেহেতু তাদের সহায়তাকারী, তারা অপরাধীও বটে। কিন্তু তারপরও আমরা যুদ্ধের সূচনা করিনি।”

তিনি বলেন, “যদি ইসরায়েল আত্মরক্ষায় সক্ষম হতো, তাহলে আমেরিকার কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যেত না। এতে বোঝা যায়, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের মোকাবিলার সামর্থ্য তাদের নেই।”

সাম্প্রতিক যুদ্ধে জায়োনিস্ট অপরাধের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বিচার বিভাগকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ আদালতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন।

জাতীয় ঐক্যের প্রতি আহ্বান
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “বিভিন্ন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকা সত্ত্বেও সবাই যখন একই কাতারে দাঁড়ায়, তখনই প্রকৃত জাতীয় ঐক্য গড়ে ওঠে। এই ঐক্য আমাদের সুরক্ষা দিয়েছে, এটি রক্ষা করাও এখন আমাদের দায়িত্ব।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের দৃঢ় মনোবল ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে! আল্লাহ কুরআনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—‘আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করেন, যে তাঁকে সাহায্য করে।’ কাজেই ইসলামী শাসনব্যবস্থা ও এর ছায়াতলে থাকা জাতির বিজয় অবশ্যম্ভাবী।”

বিচার বিভাগের প্রতিবেদন
বৈঠকের শুরুতে বিচার বিভাগের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম মোহসেনি এজেয়ি বিচার বিভাগের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন পেশ করেন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha